যশোরের চৌগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পায়েল হোসেনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে জেলা পুলিশ প্রশাসন। তাকে থানার দায়িত্ব থেকে সরিয়ে যশোর পুলিশ লাইনসে ক্লোজড করা হয়েছে।
মাত্র দেড় মাস আগে চৌগাছা থানায় যোগদান করা এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুষ, রিমান্ড বাণিজ্য, চাঁদাবাজি, ভয়ভীতি প্রদর্শন, নিরীহ মানুষকে হয়রানি এবং নারী কেলেঙ্কারির মতো গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। এসব অভিযোগ পুলিশের ভাবমূর্তিকে ব্যাপকভাবে ক্ষুণ্ন করেছে বলে অভিযোগ ওঠে।
গতকাল শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) রাতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়, যেখানে ওসি পায়েল হোসেনকে এক নারীর সঙ্গে অশালীন আচরণ করতে দেখা যায়। ভিডিওতে তিনি হাসতে হাসতে মোবাইলে কথা বলছেন এবং কখনো অশালীন ইঙ্গিত দিচ্ছেন। এমনকি একপর্যায়ে নিজের শরীরও প্রদর্শন করেন। ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পরই বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনা শুরু হয়।
এর আগে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ হয় চাঁদাবাজিতে মেতেছেন চৌগাছা থানার ওসি। ওই প্রতিবেদনে তার ঘুষ ও চাঁদাবাজির নানা কার্যকলাপের বর্ণনা দেওয়া হয়েছিল। নিরীহ মানুষকে ভয়ভীতি প্রদর্শন এবং রিমান্ডে নিয়ে অর্থ আদায়ের অভিযোগও উঠে আসে।
এ জাতীয় নানা অপকর্মের অভিযোগে রোববার (২৯ ডিসেম্বর) ওসি পায়েল হোসেনকে যশোর পুলিশ লাইনসে ক্লোজড করা হয়।
যশোরের পুলিশ সুপার জিয়াউদ্দিন আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, চৌগাছা থানার ওসি পায়েলের কর্মকাণ্ডে পুলিশের ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ন হয়েছে। গোটা ঘটনা তদন্তের জন্য অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) রুহুল আমিনকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাদের আগামী পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ওসি পায়েল হোসেন।
তিনি সাংবাদিকদের জানান, আমি ষড়যন্ত্রের শিকার। আমাকে ট্রাপে ফেলা হয়েছে। যদিও এ বক্তব্যে তার বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি।
তিন সদস্যের তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রুহুল আমিন বলেন, অভিযোগের যথাযথ তদন্ত করা হবে। সব পক্ষের বক্তব্য শোনা হবে এবং সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হবে।
এদিকে, অভিযোগ প্রমাণিত হলে ওসি পায়েল হোসেনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ওসি পায়েলের বিরুদ্ধে উঠা এমন গুরুতর অভিযোগ এবং ভিডিও প্রকাশের ঘটনায় সাধারণ মানুষের মধ্যে পুলিশ প্রশাসনের প্রতি নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়েছে।
খুলনা গেজেট/এএজে